মা জোহরা তাজের জানাযায় কন্যা রিমি ও পুত্র সোহেল তাজের স্মৃতিচারণ!

সোহেল তাজের স্মৃতিচারণঃ আজকে আমাদের মা সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীনের নামাজের জানাযায় উপস্থিত শ্রদ্ধেয় মুসল্লীগন আসসালামু আলাইকুম,

আজকে আপনারা অনেক কষ্ট করে এই জানাযার নামাজ আদায় করার জন্য অপেক্ষা করছেন ।আজকে আমি আমার পরিবারের পক্ষ থেকে আমার বোনদের সকলের পক্ষ থেকে আপনাদের কাছে বিনীতভাবে বলতে চাই যে আমার মা যদি কোন সময়, কোন দিন্‌ আপনাদের কারো মনে বুঝে , না বুঝে যদি কষ্ট দিয়ে থাকেন আপনাদের কাছে আমি আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে আজকে অনুরোধ করব আপনারা উনাকে মাফ করে দিবেন, এবং ক্ষমা করার জন্য আমি আজকে আমার পরিবারের পক্ষ থেকে আপনাদেরকে অনুরোধ জানাচ্ছি ।

এবং উনার কাছ থেকে যদি কারো দেনা পাওনা থেকে থাকে সেটা আমাদেরকে জানাবেন আমরা তা মিটিয়ে দিব।আমি আর কথা বাড়াবো না । আপনাদের সম্মুখে আপনাদের নির্বাচিত সংসদ সদস্য সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীনের মেঝ কন্যা সিমিন হোসেন রিমি আপনাদের সামনে কথা বলবেন । তার আগে শুধু আপনাদের সামনে একটি কথা বলতে চাই , এই ঐতিহ্যবাহী কাপাসিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আমাদের অনেকেরই অনেক স্মৃতি আছে।

আমার মা সম্পর্কে শুধু একটি কথা বলেই শেষ করব। আমার মা ছোট বেলা থেকেই মানুষকে ভালবাসতেন এবং মানুষকে ভালবাসতেন বলেই শহীদ তাজউদ্দীন আহমদের সহধর্মীনী হয়েছিলেন এবং আমার বাবাকে সাহস যুগিয়েছিলেন এবং সর্বসময় উনাকে সহযোগিতা করেছিলেন । পরবর্তীতে আমার বাবার মৃত্যু হওয়ার পরে তিনি বাংলাদেশের জনগনের জন্য ,বাংলাদেশের মানুষের মুক্তির জন্য , গনতন্ত্রের আন্দোলনের জন্য নিজেকে জড়িয়ে ছিলেন সেই আন্দোলনের অংশ হিসেবে এই কাপাসিয়া পাইলট স্কুলের মাঠে আমার এখনো মনে আছে আমি সেই ছোট্ট ৫-৬ বছর বয়সের শিশু সদ্য বাবাকে হারিয়েছিলাম ,

আমার মা আপনাদের সামনে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন এই যে সোহেল, আপনাদের সোহেল , ছোট্ট সোহেল যে তার বাবাকে হারিয়েছে ৭৫ এর ১৫ই আগষ্ট এর পর ৩রা নভেম্বর।আমার মা চিরদিন মানুষের জন্য কাজ করেছেন মানুষের মানুষকে ভালবেসেছেন যার প্রমান এই কাপাসিয়ার মাটিতেও তিনি রেখে গেছেন  তার স্বামীর জন্মভূমি এই দরদরিয়ার মাটিতে , গরীব-দুঃখী মানুষের দেখাশুনা করেছেন ।

আমার মা অনেকসময় কাউওকে না জানিয়েও এই কাজগুলো করেছেন এবং আমার মায়ের এই কাজগুলো আমার তিন বোন এবং আমরা সকলেই চেষ্টা করছি ।বিশেষভাবে আমার তিন বোন আমার মায়ের এই কাজগুলো এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন । আপনারা সকলেই আমাদের জন্য দোয়া করবেন আমার মা যেমন একজন সাহসী মানুষ ছিলেন আল্লাহ যেন আমাদেরও সেই ধৈর্য দেয় আপনাদের সম্মান রাখার জন্য ।

দুঃখ ,কষ্ট-শোককে যেন বহন করে নিয়ে যেতে পারি সেই শক্তি যেন আল্লাহতালা আমাদেরকে দেয় এই দোয়া সকলের কাছ থেকে চাই এবং আমার মা কে আল্লাহ যেন বেহেশত নসীব করেন সেই দোয়া চেয়ে আমি বিদায় নিচ্ছি । এখন আপনাদের সম্মুখে আপনাদের নির্বাচিত সংসদ সদস্য আমার মেঝ বোন সিমিন হোসেন রিমি কথা বলবেন।

কন্যা সিমিন হোসেন রিমির স্মৃতিচারণ :
আসসালামু আলাইকুম,আজকে আমি আপনাদের সামনে আমার পরিবারের পক্ষ থেকে আমার মায়ের জন্য সকলের কাছে দোয়া চাই । আমার মায়ের একটা স্বপ্ন ছিল যে এই বাংলাদেশটা অনেক সুন্দর হবে অনেক ভাল একটা দেশ হবে । 

আপনারা সকলে মিলে কাজ করবেন । আপনারা দেখবেন উনার মৃত্যুর পর দুইদিন ধরে সকল পত্রিকাগুলোতে তার যে কর্ম,তার যে চিন্তা এই সমস্ত প্রকাশিত হচ্ছে।আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ আপনারা সকলে বিশেষ করে তরুন সমাজ তার যে চেতনা ,চিন্তা-ধারা ছিল এবং তার ভালর জন্য যে সবসময় চিন্তা চেতনা ছিল এই পথে আপনারা অগ্রসর হবেন।

আপনারা আজকে যে সকলে এসেছেন আমাদের পরিবারের প্রতি যে ভালবাসা দেখিয়েছেন সবসময়,আমার বাবা মা তাদের যেই আদর্শ তা যেন আমরা ধরে রাখতে পারি আপনারা সেই দোয়া করবেন এবং আপনারা তাদের সেই পথে নিজেদের পরিচালিত করবেন যেন আমরা বাংলাদেশের মধ্যে সত্যি সত্যিই এই কাপাসিয়াটা গর্বের একটা যায়গা হয় মাথা উচু করে দাড়ায়।আপনাদের কাছে আবারো মায়ের জন্য দোয়া চাই।

No comments

Theme images by Storman. Powered by Blogger.