মিঠামইন হাওর। বালিখোলা রোড। কিশোরগঞ্জ জেলা

টলমলে নীল জল আকাশের রং চুরি করে নিত্য খেলা করে!
পানির ভেতরে সারি সারি হিজল গাছ মাথা উচু করে তাদের অস্তিত্বের জানান দিচ্ছে।যাদের বাড়ি গ্রামে হিজল গাছ নিয়ে যাবে তাদেরকে কৈশরে।

কল্পনা নয়, সত্যি এ যেন মর্তের মাঝে স্বর্গের হাতছানি।
ট্রলারে ভাসতে ভাসতে পানি আর আকাশের মিতালী দেখতে হলে আপনাকে যেতে হবে কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন হাওরে।প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যে ভরপুর শান্ত মিঠামইন হাওর।

কোথায় কোথায় ঘুরে বেরাবেনঃ
১.মিঠামইন হাওর।
২.সাবমারসিবল রোড(ভাসমান ব্রীজ)।
৩.অষ্টগ্রাম।
৪. মহামান্য রাস্ট্রপতি আব্দুল হামিদের বাড়ি
৫.হাওরের তীরে মিটামইন বাজার।
৬.হাওরে ভাসমান ছোটছোট দ্বীপের মতো গ্রাম।
৭.বালিখোলা রোড
মুলকথা হলো আমরা সারাদিনে ট্রলারে ভাসতে ভাসতে এসব যায়গাগুলো ঘুরে দেখেছি।আমরা চামড়াঘাট থেকে মিঠামইন ঘুরে বালিখোলা এসে ট্রলার ছেড়ে দিয়েছিলাম। সকাল থেকে বিকেলের মধ্যে রিলেক্সভাবে এর চেয়ে বেশি ঘুরা সম্ভব নয়।

কিভাবে যাবেনঃ
ঢাকা থেকে দুইভাবে আসতে পারবেন।
১. ট্রেনেঃ কমলাপুর থেকে কিশোরগঞ্জের ট্রেন ছেড়ে যায় প্রতিদিন সকাল ৭:১৫ তে একারোসিন্ধুর প্রভাতী (বুধবার বন্ধ)।৩/৪ ঘন্টার ট্রেন ভ্রমনে খরচ পড়বে ১৩০-২৮০ টাকা।কিশোরগঞ্জর রেল স্টেশন থেকে অটোরিকশায় করে চামড়াঘাট বাজারে আসবেন।
২. বাসেঃ মহাখালী থেকে প্রতিদিন আধা ঘন্টা পরপর বাস ছেড়ে আসে, যেটা আপনাকে সরাসরি চামড়াঘাট বাজারের কাছে নামিয়ে দিবে। (উজানভাটি পরিবহন ভাড়া২৫০/-টাকা)

ট্রলার ব্যাবস্থাঃ
চামড়াঘাটেই (বাজারের সাথেই) অনেক ধরনের ট্রলার থাকে। সেখান থেকে আপনাদের পছন্দমতো ট্রলার বাছাই করে মাঝির সাথে ভাড়া ঠিক করে নিবেন।
আপনারা কোথায় কোথায় ঘুরবেন তা মাঝিকে আগে থেকে বুঝিয়ে বলে সারাদিনের জন্য ট্রলার ভাড়া করে নিবেন। আমরা উপরের উল্লেখিত যায়গাগুলো ঘুরেছি।
সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত আমাদেরকে ট্রলার ভাড়া দিতে হয়েছে ২৫০০/- টাকা। (প্রচুর দামাদামি করে নিবেন, আমাদের কাছে ট্রলার ভাড়া চেয়েছিলো ৬০০০/- টাকা!)
আমরা যে ট্রলারে গিয়েছিলাম সে ট্রলারের মাঝির নাম্বার দিয়ে দিচ্ছি প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে পারেন।
মুসাহিদ পরিবহনঃ- 01963458378

কোথায় খাবেনঃ
সকালের নাস্তা করে নিবেন চামড়াঘাটেই(খাবারের মান ততটা ভালো নয়,তবে এখানকার রসগোল্লা মিস্টিটা কেউ মিস করবেন না!) ।
তারপর প্রয়োজনীয় শুকনো খাবার,বিশেষ করে পানি সাথে করে নিয়ে ট্রলার যাত্রা শুরু করবেন।

দুপুরের খাবারঃ রাস্ট্রপতির বাড়িতে গিয়ে আপনারা দুপুরের খাবারের বিরতি নিবেন। এলাকাটা ঘুরে দেখবেন। বিশেষ করে হাউরের তাজা মাছ খেতে হলে মিঠামইন বাজারে গিয়ে আগে থেকে খাবারের অর্ডার করে আসতে হবে। তাহলেই শেরা খাবারটা খেতে পারবেন।

সারাদিন ঘুরেফিরে শেষবিকেলে বালিখোলা রোডের চোখ শিতল করা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে আবার চলে আসুন চামড়াঘাট বাস টিকেট কাউন্টারে। সেখান থেকে আগের মতোই ফিরে যান আপনার গন্তব্যে। আর হ্যা অবশ্যই বালিখোলা এসে সেখানকার বাজারের হাউরের পানি দিয়ে তৈরি করা চায়ের স্বাদ না নিয়ে আসবেন না।

বিঃদ্রঃ পরিবেশকে দূষনমুক্ত রাখার চেস্টা করুন। হাউরে সাতার কাটার সময় খুবই সাবধানতা অবলম্বন করবেন (পানিতে স্রোত অনেক বেশি)।

No comments

Theme images by Storman. Powered by Blogger.